স্ত্রীকে নিয়ে ওমরাহ হজ করতে চান সাব্বির !!

ব্যস্ত শহরের কোনো এক বাসস্ট্যান্ডে প্রথম দেখা। এরপর থেকে গল্পের শুরু, শেষটা হয়েছে চলতি বছর মার্চে। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর প্রেমের পর মালিহা তাসনিম অর্পার সঙ্গে জীবনের ইনিংস শুরু করেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাব্বির রহমান।সম্প্রতি আড্ডার ছলে নিজেদের প্রেমের গল্প নিয়ে বসেন সাব্বির-অর্পা। শেয়ার করেন, জীবনের বাঁকে পরিবর্তন আসার নানা স্মৃতি।

‘সম্পর্কের শুরুটা সাড়ে পাঁচ বছর আগে। এক বাসস্ট্যান্ডে অর্পাকে প্রথম দেখি। আমি তখন রাজশাহী যাচ্ছিলাম। সেদিনের প্রথম দেখাতেই তাঁকে ভালো লেগে যায়। এরপর আস্তে আস্তে বিষয়টি আগায়। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ভালোলাগা, কাছে আসা এবং এরপর পরিবারের সম্মতিতে এক হওয়া।’ বলছিলেন সাব্বির।তখন তো অনেক তরুণ ছিলাম, অর্পাও অনেক ছোট ছিল। তবে এটা ঠিক প্রথম দেখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমারও প্রথম দেখায় ভালো লেগেছিল তাঁকে। দেখার পর নিজেই ভাবি, দেখা যাক কতটুকু আগানো যায়।

অন্যদিকে অর্পা বলেন, ‘২০১৫ সালের বিশ্বকাপের আগে তখন ওকে তেমন কেউ চিনত না। তখন এমনি ভালো লাগত। তবে তখন যেটা বিশেষ ছিল এখনো সেটাই আছে। তখনো ওর হাসি ভালো লাগত, এখনো।’সবচেয়ে বড়গুণ হলো অর্পা অনেক গোছানো-সাজানো, অনেক পরিশ্রমী, আমাকে অনেক ভালোবাসে। এ ছাড়া আরেকটা জিনিস সবচেয়ে ভালো লাগার সেটা হলো ওর কোনো বাইরের চিন্তা বলে কিছু নেই। আমি সবসময় চিন্তা করতাম, একটা সংসারী মেয়ে বিয়ে করব, সেইদিক থেকে ও সঠিক। ওকে প্রথম দেখা থেকেই মনের মতো মনে হয়েছিল।

অর্পার কথায়, ‘সব ছেলেই মোটামুটি মেয়েদের দিয়ে সংসারের সবকিছু করাতে চায়। মনে করে, বাসার সবকিছুর দায়িত্ব মেয়েদের, পুরুষরা নষ্ট করবে, মেয়েরা ঠিক করবে। এই দিক থেকে সাব্বির একদমই আলাদা। আমার সঙ্গে সব কাজ করে। মাঝেমধ্যে আমি অবাক হই, কীভাবে একটা মানুষ এত হেল্পফুল হতে পারে।’আমাদের সম্পর্কের সবচেয়ে বিশেষ স্মৃতি হলো অর্পাকে নিয়ে প্রথম বাইকে করে ঘুরতে যাওয়া। চুরি করে গিয়েছিলাম। এটা আমার সবসময় মনে থাকবে। কোনো মেয়েকে নিয়ে প্রথম বাইক রাইড। অর্পার কাছেও সেটাই, ‘প্রথম ওর সাথে বাইকে চড়া।’

সাব্বির যখন খেলে তখন খুব ভয় লাগে। আমি তেমন ক্রিকেট বুঝতাম না, এখনো তেমন বুঝি না। কিন্তু যখন ও খেলার মাঠে থাকে তখন টিভির সামনে যাই। ফিল্ডিংটা মনোযোগ দিয়ে দেখি। তবে ব্যাটিংয়ে যখন চার-ছয় মারে তখন ভয় পাই, ভাবি এত চার-ছয় মারার দরকার ছিল না, যদি আউট হয়ে যেত। এ রকম ভয় কাজ করে।‘এটা খুবই খারাপ লাগে, ভয় লাগে কিন্তু বাইরে বিষয়টি বুঝতে দেই না। কারণ আমার খারাপ লাগা বুঝতে দিলে ওর আরো খারাপ লাগবে। ওকে সাহস দেওয়ার জন্য শক্ত থাকি।’ যোগ করেন অর্পা।‘ওকে (সাব্বির) বিজ্ঞাপনে দেখলে আমার খুব ভালো লাগে। বিষয়টি আমি খুব উপভোগ করি। ওর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যত বিজ্ঞাপন আছে সব আমার ফোনে রাখা আছে। কিছুদিন পর পরই দেখি।’

আমি রাগ করলে সাব্বির প্রথমে কিছুটা চুপ থাকে। তবে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। আমাদের রাগ কখনো স্থায়ী হয় না। আমার মনে হয় না কখনো এক ঘণ্টা পার হয়েছে। যাই ঘটুক, এক ঘণ্টার মধ্যে আমরা মিলে যাই।সাব্বিরের কথা একই, ‘ওর সাথে আমি বেশিক্ষণ কথা না বলে থাকতে পারি না। রাগ বেশিক্ষণ থাকে না। চেষ্টা করি সবকিছুতে মানিয়ে নিতে। তো যেটা নিয়ে রাগারাগি হয়, সেটা আমি তাড়াতাড়ি ঠিক করে ফেলার চেষ্টা করি।’‘খারাপ সময়ে অর্পা আমাকে অনেক সাপোর্ট দেয়। আসলে এই সময়গুলোতে পরিবারের সাপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমি যখন নিষিদ্ধ ছিলাম, তখন মানসিকভাবে আমাকে শক্ত রেখেছে। এখনো খারাপ সময় যাচ্ছে। ও আমার পাশে আছে। আমরা একসঙ্গে আছি। আশা করি, খারাপ সময় কেটে যাবে।’ বলছিলেন সাব্বির।

সাব্বির বলেন, ‘এই মুহূর্তে সব কিছু থেকে ছুটি দেওয়া হলে অর্পাকে নিয়ে ওমরাহ পালন করতে যেতে চাই। পবিত্র মক্কা শরিফে আল্লাহর ঘরে যেতে চাই। এটা খুবই ইচ্ছে।’‘যারা আমার ভিডিওটি দেখছেন তাদের সবাইকে বলছি, এত দিন আমাকে যেভাবে সমর্থন দিয়েছেন, আগামী দিনেও সেভাবে সমর্থন দিয়ে যাবেন। আমার ভালো কিংবা খারাপ সময়েও আমার পাশে থাকবেন। মানসিকভাবে শক্তি দিয়ে যাবেন, কারণ আপনারাই আমার শক্তি।’ বলছিলেন সাব্বির।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *