স্বামীকে হত্যা করতে পরকীয়া প্রেমিকের কাছে পাঠায় স্ত্রী!

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট বিল থেকে হযরত আলী নামে এক ব্যক্তির লাশ ও তার স্ত্রী ও প্রাক্তন প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিদেশী প্রেমিক সম্পর্কে মহিলার ভগ্নিপতি। স্ত্রী পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বামীকে হত্যার জন্য পাঠায়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আমান উল্লাহর ছেলে জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর এলাকার মো। লিয়াকত আলী (৩৫) এবং শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঁশকান্দা উল্লাপাড়া এলাকার মৃতের স্ত্রী। সাবিনা খাতুন (২৬)

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮ টায় জেলা গোয়েন্দা শাখার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) জেলার হালুয়াঘাট থেকে সাবিনা খাতুন এবং শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঁশকান্দা উল্লাপাড়া থেকে লিয়াকত আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে মৃত হযরত আলীকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন, একটি লুঙ্গি, একটি শার্ট, একটি ন্যস্ত এবং একটি তোয়ালে পাওয়া গেছে। পরে তাদের আদালতের আদেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি বলেন, লিয়াকত আলী রাজধানীর উত্তরা এলাকায় রাজমিস্ত্রি ও রিকশাচালকের কাজ করতেন। ১০ বছর আগে সাবিনা খাতুন তার প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়েছিলেন এবং তার শ্যালক লিয়াকতের সাথে বসবাস শুরু করেছিলেন। পরে সাবিনা অন্য কারো বাসায় চাকরি নেয়। এই পর্যায়ে, লিয়াকত এবং সাবিনা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

এই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে লিয়াকতের পরিবারে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ার পর সাবিনা দুই বছর আগে ঢাকা থেকে তাদের নিজের বাড়িতে চলে আসেন। প্রায় আট -নয় মাস আগে সাবিনার সামাজিকভাবে হযরত আলীর সাথে বিয়ে হয়েছিল। তারপরেও দুলাভাই লিয়াকতের সঙ্গে সাবিনার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অবসান ঘটেনি।

প্রায় এক মাস আগে যখন লিয়াকত ও সাবিনার মধ্যে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি হযরত আলীর হাতে ধরা পড়ে তখন তারা হযরত আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার মতে, ২৯ শে সেপ্টেম্বর সাবিনা হযরত আলীকে হত্যার অজুহাতে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর গোরকপুর বাজারে হযরত আলীকে পাঠায়। পরে তিনি বেড়াতে যাওয়ার অজুহাতে হযরত আলীকে হালুয়াঘাট উপজেলার কুটিকুড়া গ্রামে নিয়ে যান। সেখান থেকে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় উলুয়ারকান্দা বিলে, গলায় তোয়ালে দিয়ে মোড়ানো এবং তার লাশ কাদায় বিছিয়ে রাখা হয়।

ঘটনার একদিন পর, ৩০ আগস্ট বিকেলে পুলিশ কুতিকুরা গ্রামের উলুয়ারকান্দা বিল থেকে হযরত আলীর লাশ উদ্ধার করে। পরদিন ৩১ আগস্ট ভিকটিমের ভাই আবু নাসের হালুয়াঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত হযরত আলী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের উত্তর বাঁশকান্দা গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *