হাতের সামান্য টানেই উঠে যাচ্ছে কোটি টাকার রাস্তা !!

প্রায় ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় দুই হাজার ৩’শ মিটার রাস্তকা নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নির্মিত এ রাস্তায় ব্যবহার করা হয়েছে অতি নিম্নমানের উপকরণ। ফলে রাস্তা এতটাই নিম্নমানের হয়েছে যে, হাতের সামান্য টানেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিং। ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার হাজরানিয়া এলাকায়।

নিম্নমানের এই কাজ করতে গিয়ে জনতার তোপের মুখে পড়েন ঠিকাদারের লোকজন। এমনকি সে কাজ বন্ধও করে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। কাজ বন্ধ করতে গিয়ে এলাকাবাসী ও ঠিকাদারের লোকজনের সাথে হাতাহাতি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।নিম্নমানের সড়ক নির্মাণের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামানসহ সেতু মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে দেশি বিটুমিনের পরিবর্তে ব্যবহার করছে নিম্নমানের ইরানি বিটুমিন। যার ফলে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে হাতের আঙুলের ইশারায়।প্রথম থেকেই স্থানীয় লোকজন কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কেউ তা কর্ণপাত করেননি।

জানা গেছে, উপজেলার হাজরানিয়া-বাবুরহাট বাজার পর্যন্ত দুই হাজার ৩শ মিটার রাস্তা পাকা করণে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। আর এ কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান ইসলাম ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে কাজ না করে অবশেষে স্থানীয় ঠিকাদার নুর আমিনের কাছে বিক্রি করে দেয় তারা। পরে ওই ঠিকাদার চলতি বছরে কাজটি শুরু করে। অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকে নিম্নমানের ইট-খোয়া দিয়ে কাজ করছে তারা।

এতে এর আগে স্থানীয়দের ধাওয়াও খেয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর রাস্তা কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করলেও ভালো ভাবে পরিষ্কার না করেই রাতের আধারে প্রাইম কোড দেওয়ার সময় স্থানীয়রা পরিষ্কার না হলে প্রাইম কোড দিতে নিষেধ করেন। পরে শুক্রবার রাস্তা কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

এদিকে শনিবার সকালে নিম্নমানের কাজ করার একপর্যায়ে এলাকাবাসী ও ঠিকাদারের লোকজনের সাথে হাতাহাতি হওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ঠিকাদার নিজেই পুলিশকে খবর দিয়ে এলাকাবাসীকে মামলার হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় যুবক মোমিনুর ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার কাজে অনিয়ম হচ্ছে দেখে এসও তারেককে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারের লোকজন আমাকে আক্রমণ করে। বেশি ঝামেলা করলে বিভিন্ন প্রকার মামলা দেয়ার হুমকি দেয় ঠিকাদার নুর আমিন।’

এদিকে ঠিকাদার নুর আমিন বলেন, ‘রাস্তার কাজে বাঁধা দেয়ায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর বেশি কিছু না।’তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) তারেক জানান, পরিষ্কারের সময় গাড়ি চলাচল করে বলে ধুলো-বালু থেকেই যায়। এটি কোন বিষয় না, সাধারণ মানুষ এসব বিষয় কিছু জানে না।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, রাস্তা নিয়ে যদি এলাকাবাসীর সাথে হাতাহাতির ঘটনা হয় তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্রঃ দ্যা বাংলাদেশ টুডে

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *