হাসপাতালে ১৫ দিনের শিশুকে ফেলে মা উধাও, এরপর…

চাঁদপুরে ১৫ দিনের নবজাতককে ফেলে রেখে উধাও হয়ে গেছেন এক মা। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সুজা-উদ-দৌলা রুবেল জানান, হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অপরিণত বয়সে জন্ম নেওয়া শিশুটি প্রথমদিকে অসুস্থ থাকলেও সেবাযত্ন পেয়ে এখন বেশ সুস্থ। প্রকৃত অভিভাবক শেষ পর্যন্ত না এলে নিয়ম মেনেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, শিশুটির শারীরিক অপূর্ণতা থাকলেও এখন ভালো সেবা পেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করেছে। হাসপাতালে এই নবজাতককে দত্তক নিতে ইতিমধ্যে ১৫ জনেরও বেশি ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র নার্স মুক্তি রানী দাস জানান, গত ১৫ দিন আগে এখানে এক মায়ের কোলজুড়ে আসে শিশুটি। চার দিন প্রসূতি ও নবজাতক একসঙ্গে ছিলেন। পরে চলেও যায় তারা। কিন্তু ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা হওয়ায় শিশুটিকে নিয়ে আবারও হাসপাতালে ভর্তি হয় শিশুটির মা। গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের চতুর্থ তলায় নারী ও শিশু ওয়ার্ডের একটি বেডে শিশুটিকে একা ফেলে রেখে চলে যান মা। বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনে এ সময় সেখানে ছুটে যান কর্তব্যরত নার্স। কিন্তু অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও শিশুটির পাশে ছুটে আসেননি তার মা। এই নিয়ে পুরো হাসপাতালে হইচই পড়ে যায়। চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহতলী গ্রামের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে ‘সাথী’ নামে হাসপাতালে ভর্তি হলেও সেখানে এই ঠিকানায় তাদের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের রেজিস্ট্রি খাতায় মেয়ের নানার নাম তাজুল ইসলাম লেখা ছিল। এ নিয়ে বেকায়দায় পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, হাসপাতালে ফেলে যাওয়া শিশুটিকে নিয়ে যেতে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ইতিমধ্যে একজন মা তার বুকের দুধ খাওয়াতে শুরু করেছেন। তিনি নিয়মিত শিশুটির দেখাশোনাও করছেন। এদিকে শিশুটিকে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন অনেকেই। হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স ও কুলসুমা বেগম নামে এক নারী গত তিন ধরে শিশুটির দেখাশোনা করে বাচ্চাটাকে সুস্থ করে তুলছেন। শিশুটিকে দেখাশোনাকারী কুলসুমা বেগম বলেন, ‘আমি শিশুটিকে মায়ের আদর-স্নেহ দিয়ে লালন-পালন করছি। তাকে পালনের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছি। কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।’

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *