১০৭ বছরের ঘুর্ণিঝড়ের রেকর্ড ভাঙতে পারে এবার !!

২০১৫ সালে মোট ১২টি নিম্নচাপ তৈরি হয়, যার মধ্যে মাত্র ৪টি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ২০১৮ সালে নিম্নচাপ তৈরি হয় ১৪টি। এর অর্ধেক পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়ে। এদিকে ২০১৯ সালে মোট ৯টি নিম্নচাপ তৈরি হয়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭টি পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে।

এর ফলে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হওয়ার হারের নিরিখে বিগত বেশ কয়েক বছরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ২০১৯ সাল।

সাধারণত বর্ষার আগে ও পরে ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপগুলোর বেশির ভাগই পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়ে। এই এলাকায় তৈরি হওয়া নিম্নচাপগুলোর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে আশঙ্কা থাকে ৮০ ভাগ। মূলত বর্ষার আগে অর্থৎ এপ্রিল ও মে মাস এবং বর্ষার পরে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে দেখা যায় এই তিন সাগরের এলাকায়।

বর্ষাকালে কম ঘূর্ণিঝড় হয়

নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার এই হার কমে যায় বর্ষাকালে। এমনকি জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার এই হার মাত্র ১০ শতংশ। এই নিম্নচাপগুলোর আবার অনেক রকম ভাগ থাকে। বিভিন্ন স্তরে এগুলো হয়ে ওঠে ঘূর্ণিঝড়ে। নিম্নচাপ থেকে তৈরি হয় গভীর নিম্নচাপ। এর পরের ধাপেই এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এরপর শক্তি বাড়তে বাড়তে এটি হয়ে ওঠে শক্তিশালী থেকে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।

ঘূর্ণিঝড়ের পাঁচটি আলাদা ক্যাটাগরি

বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার ছুঁলে সেটিকে একটি নাম দেয়া হয়। যেমন বুলবুলের নামকরণ হয়েছিল। এরপর এটা ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার থেকে ১১৭ কিলোমিটার বেগের ব্যবধানে থাকলে সেটিকে একটি ঝড় বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ১১৭ কিলোমিটারের বেশি হয়, তখন এটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

বাতাসের তীব্রতা ও ধ্বংসক্ষমতা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের আবার এক থেকে পাঁচ মাত্রার ৫টি আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়।

এখন পর্যন্ত ৭টি ঘূর্ণিঝড় এই বছরে

২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যের বছরগুলোর হিসাবের আলোকে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে মোট ১২টি নিম্নচাপ তৈরি হয়, যার মধ্যে মাত্র ৪টি ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ২০১৮ সালে নিম্নচার তৈরি হয় ১৪টি। এর অর্ধেক পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়ে। এদিকে ২০১৯ সালে মোট ৯টি নিম্নচাপ তৈরি হয়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭টি পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে।

এর ফলে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হওয়ার হারের নিরিখে বিগত বেশ কয়েক বছরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ২০১৯ সাল।

বঙ্গোপসাগরের চেয়ে আরব সাগরে বেশি ঘূর্ণিঝড়

সাধারণত আরব সাগর থেকে বঙ্গোপসাগরে বেশি নিম্নচাপ তৈরি হয়। কিন্তু এই বছর উল্লেখযোগ্যভাবে সংখ্যাটা আরব সাগরের ক্ষেত্রে বেশি। এই কয়েক দিন আগেই কিয়ার ও মাহা তৈরি হয় আরব সাগরে। এর আগে বঙ্গোপসাগরে বর্ষার আগে তৈরি হয় ফণী ও পাবুক। আর কয়েক দিন আগেই তাণ্ডব ছড়ায় বুলবুল।

১০৭ বছরের রেকর্ড ভাঙার মুখে এদিকে শেষবার আরব সাগরে একই বছরে চারটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল ১৯০২ সালে। এবং ২০১৯-এর দেড় মাস বাকি থাকতেই সেই সংখ্যা ছোঁয়া হয়ে গেছে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *