আমরা যারা প্রবাসে বসবাস করছি আমাদের ভাবতে হবে, যে…
আমরা যারা প্রবাসে বসবাস করছি আমাদের ভাবতে হবে, যে মানুষটির সঙ্গে আপনি বন্ধুত্ব, সুসম্পর্ক আর ওঠা বসা করছেন; সে মানুষটি আপনার উপকারে আসবে নাকি ক্ষতি করবে।
আপনি যখন ব্যবসা-বাণিজ্যে সফলতায় চিন্তা চেতনার সঙ্গে বড় হওয়ার পথে দৌড়াতে থাকবেন। তখন কিছু মানুষ আপনাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। আবার কিছু মানুষ আপনার সফলতার পেছনে বাঁধা হয়ে অপেক্ষা করবে যা আপনার জন্য শুধু আর্থিক নয় মানুষিক ক্ষতি ছাড়াও জীবন থেকে সরিয়ে দিতে চাইবে। সুতরাং আপনাকে সচেতন ও সাবধান হতে হবে এখনই।
আশপাশে যে মানুষগুলো আছে তার মধ্যে কে আপনার জন্য উপকার করবে আর কে করবে না, তার ওপর বিবেচনা করেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সম্পর্কের গুরুত্ব দিতে হবে।
একবার ভাবুনতো? দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫৪জন লোক মারা যায়। বিভিন্ন দেশের নাগরিকসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি। প্রতিনিয়ত এ সব অপ্রত্যাশিত নির্মম খুন-হত্যাসহ কিডন্যাপের মাধ্যমে হত্যার মত জঘন্য অপরাধ অত্যন্ত দুঃখের এবং হতাশার হলেও
আপনি যদি আজ আহত অথবা নিহত হন কি ঘটতে পারে? আপনার মৃত্যুর খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই কে বা কারা ছুটে আসবে?
চোখ বন্ধ করে চিন্তা করুন? আশপাশের যে সব মানুষ (বাংলাদেশি) আছে তারা কি আপনার মৃত্যুতে ছুটে আসবে? ভাল বন্ধু যারা আছে তারা যদিও বিলম্ব হতে পারে, রাতের বেলা না আসলেও সকালে আসার চিন্তা করে অতঃপর আসবে। আপনাকে শেষবারের মত হলেও দেখতে আসবে।
একটু সুস্থ মস্তিষ্কে, মন মেজাজ ঠিক রেখে চিন্তা করুন দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেছেন রিজিকের টানে না হয় মৃত্যুর টানে। এ পৃথিবী কয় দিনের? মৃত্যু নির্ধারিত সময়ে আসবে। এতে কোন সন্দেহ নাই।
আপনি আমি সবাই জানি ডাক আসলে চলে যেতে হবে। এক মুহুর্ত দেরী করবে না আপনাকে ওপারে নিয়ে যেতে।আমার ভাল আর মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে আসবে। যদি এই চিরন্তন সত্যকে বিশ্বাস করেন তাহলে হালাল উপার্জন করুন। সকল মন্দ কাজ পরিহার করুন। দেশে-প্রবাসে সকল সম্পর্কগুলো মূল্যায়ন করুন।
পৃথিবীতে সবচেয়ে কাছের মানুষ দেশে রেখে আসা আপনার মা-বাবা ভাই-বোন তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখুন। তাদের খাওয়া দাওয়া ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিজে গ্রহণ করুন। পরিবারে যেখানে ২০-৩০ হাজার খরচ হবে সেখানে ৫-১০ হাজার টাকা দিয়ে মুখে বুলি না চুটিয়ে তাদের অধিকার হক আদায় করুন। মা-বাবা তাদের স্থান বৃদ্ধাশ্রম নয় এটুকু বুঝুন। তাদের দোয়া ছাড়া জীবনে বড় হওয়া সম্ভব নয়। তাই সবার আগে সবচেয়ে বেশি এ সম্পর্ককে মূল্যায়ন করুন।
এবার আসুন দেশে রেখে আসা আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশী যারা আপনার পরিবারে বিপদে আপদে সবার আগে ছুটে এসে ছিল তারা। আপনার প্রতিবেশী দূরের আত্মীয়ের থেকেও বেশি হকদার। কারণ তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলে সবার আগে আপনার বিপদে পাশে দাঁড়াবে। জায়গা জমি নিয়ে কিংবা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন বিষয় নিয়ে আপনার আত্মীয়ের সঙ্গে বিরোধ থাকলে আজই মিটেয়ে ফেলুন। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুললে একটি দৃঢ় বন্ধন তৈরি হবে। যা আপনার জীবনে শুধু নয় ভবিষ্যৎ সন্তানদেরও নানা প্রতিবন্ধকতায় অনেক বেশী কাজে আসবে।
এছাড়াও আশপাশের গরিব, এতিম, বিধবাসহ যে সকল দুঃস্থ্য পরিবার আছে তাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়ীয়ে দিন।
এক কথায় আপনিও আত্নীয়-প্রতিবেশীর হক আদায় করুন।
জীবন চলার পথ বন্ধু ছাড়া কল্পনা করা অসম্ভব। আর তাই বন্ধু নিয়ে মেতেই জীবন পার করা চলবে না। জানতে,বুঝতে হবে কে আপনার আসল প্রকৃত বন্ধু?
ভালভাবে চিন্তা না করে কিছু টাকা কর্য দিয়ে দেখুন, ওয়াদা মোতাবেক পান কিনা? বুঝতে দেরি হবে না। বিপদে পড়ে দেখেন চিনতে কষ্ট হবে না। এমন কিছু ভাল বন্ধু তৈরি করুন যাদের আপনি ডাক দিলেই ছুটে আসবে আপনার বিপদে-আপদে। আপনার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে যে কোন সংকটময় মুহুর্তে।
ভাল বন্ধু উপকার করতে না পারলেও অন্তত আপনার ক্ষতি করবে না,সঠিক পরামর্শ দিয়ে আপনার পাশে থাকবে। দেশ কিংবা বিদেশ হোক ভাল বন্ধু চিনতে ভুল করার কারণে আমাদের জীবনে চরম মূল্য দিতে হয়। চিপসের মতো মুখে দিলে ক্ষণিকের মধ্যে কিছু বন্ধু শেষ হয়ে যায়।
তাই বন্ধু চেনা খুব জরুরী। যে বন্ধুর দ্বারা আপনার চরিত্র সুরক্ষিত নয় কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে তার সঙ্গ যত দ্রুত পারেন পরিত্যাগ করেন। ভাল সম্পর্ক আজীবনের সম্পদ। যা বিশ্বাস দিয়ে গড়তে হয় লালন করতে হয় আস্থার সাথে দায়িত্ব নিয়ে। ভাল বন্ধু আপনাকে এমন স্থানে সম্মানের আসনে নিয়ে যাবে যে খানে টাকা পয়সা পৌছাতে পারবে না।