দেশের খবর

করোনায় প্লাজমা থেরাপি নিয়ে বাংলাদেশে যা হচ্ছে !!

করোনাভা’ইরাস রোগীদের প্লাজমা থেরাপি দেওয়া নিয়ে বাংলাদেশে সম্প্রতি ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। করোনা আ’ক্রান্ত হয়ে যারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। এমন ব্যক্তির রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে আ’ক্রান্ত ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। এতে আ’ক্রান্ত ব্যক্তির শরীরেও সেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে কেউ কেউ সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে।

এই অ্যান্টিবডি আ’ক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে করোনাভা’ইরাসকে মোকাবিলা করে। অবশ্য সব রোগীদের শরীরে কাজ করার ব্যাপারে সন্দেহাতীত প্রমাণ না থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাকে শুধুমাত্র পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রাখার পরামর্শ দিচ্ছে।কিন্তু বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন এক চিত্র। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা।

ফেসবুকে প্লাজমা চেয়ে আহ্বান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইদানিং প্রচুর গ্রুপ তৈরি হয়েছে যেখানে কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের প্লাজমা দিয়ে জীবন বাঁচানোর আহ্বান জানাচ্ছেন।করোনাভা’ইরাস প্রতিরোধে স্বতঃস্ফূর্ত এই কাজটি করছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরি হয়েছে এই সম্পর্কিত ‘হ্যাশট্যাগ’।

অনেক রোগীর আত্মীয় সরাসরি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের সন্ধান করছেন।কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে প্লাজমা দান করেছেন এমন ব্যক্তিরাও ফেসবুকে জানান দিচ্ছেন। ‘প্লাজমা ব্যাংক’ তৈরির ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।ফেসবুকে ‘প্লাজমা’ শব্দটি লিখে খুঁজে অন্তত কুড়িটি গ্রুপ পাওয়া গেছে। প্রায় সবগুলোতে লেখা রয়েছে এই গ্রুপগুলোর মূল উদ্দেশ্য মানুষকে সাহায্য করা।

এমন কয়েকটি গ্রুপে দেখা গেছে প্রতি ঘণ্টায় বহু মানুষ প্লাজমা দানকারীর খোঁজে ফোন নম্বর আর হাসপাতালের নামসহ পোস্ট দিয়েছেন। ফেসবুকে এমন একটি গ্রুপের উদ্যোক্তা করোনাভা’ইরাস থেকে সেরে ওঠা টেলিভিশন সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন।তিনদিনে তার গ্রুপের সদস্য দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার। তিনি বলছেন, ‘আমি নিজে ভুগেছি তাই বুঝতে পারছি। কারও প্রিয়জন যদি আ’ক্রান্ত হয় সে নিশ্চয়ই চাইবে শেষ চেষ্টা করে দেখি।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন কী?

শুধু পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর্যায়ে এটিকে রাখার পরামর্শ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি অন্তর্বর্তীকালীন গাইডলাইন দিয়েছে।তাদের বক্তব্য, কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি সকল রোগীর ওপর সন্দেহাতীতভাবে কাজ করে এমন কোনো প্রমাণ নেই। তাই এটি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

সংস্থাটি বলছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের বাইরে গবেষণার অংশ হিসেবে এটির প্রয়োগে অংশ নিতে চাইলে এর লাভক্ষতি যাচাই করার পর একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কমিটি এবং নৈতিকতা বিষয়ক কমিটির কাছে থেকে অনুমোদিত হতে হবে।প্লাজমা থেরাপি ব্যবহারের আগে রোগীর কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। প্লাজমা থেরাপি ব্যবহারের পর তার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করে, তা সঠিকভাবে নথিভুক্ত করে চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের অবহিত করতে হবে।

এই ‘প্রটোকল’ কতটা মানা হচ্ছে?

শুধু পরীক্ষার জন্য প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের কথা বলা হলেও বাংলাদেশে বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় এই থেরাপি দেওয়া হচ্ছে।ফেসবুক গ্রুপগুলোতে গেলে বিভিন্ন মানুষের পোস্টে বহু হাসপাতালের নাম রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া প্রটোকল তারা কতটা মানছেন সেই প্রশ্নে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ডা. মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া বলছেন, ‘স’ব যায়গায় দেওয়া হচ্ছে তা সঠিক নয়। কয়েকটি জায়গায় দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। যেহেতু করোনাভা’ইরাস একদম নতুন। এর কোনো চিকিৎসা নেই, ভ্যাকসিন নেই। তাই প্লাজমা থেরাপির ব্যাপারে রোগী ও তাদের আত্মীয়রা নিজেরাই বেশি আগ্রহী।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলছেন, ‘আমাদের নিজেদের কোনো গাইডলাইন নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে বলবে সেভাবেই আমরা এগোবো। সবার জন্যই যে প্লাজমা থেরাপি তা নয়। এর জন্য অ্যান্টিবডি ম্যাচিং এর একটি বিষয় আছে। করোনাভা’ইরাসের সব চিকিৎসাই এখন পরীক্ষামূলক। প্লাজমা থেরাপিও তাই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি রিকমেন্ড না করে তাহলে আমাদের সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও তা রেকমেন্ড করে না।’

প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ খান বলছেন, ‘আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বৈজ্ঞানিক গবেষণা করছি।’

তিনি বলেন, ‘রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। যাদের শ্বাসকষ্ট আছে, অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যাদের নিউমোনিয়া আছে এরকম মারাত্মক অসুস্থদের ব্যাপারে একটা গাইডলাইন দেয়া আছে। ‘সিভিয়ারলি ইল’ আর ‘ক্রিটিকালি ইল’ এই দুই ধরনের আ’ক্রান্ত ব্যক্তিদের এই থেরাপি দেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলছেন, ‘তবে অ্যান্টিবডির একটি মাত্রা থাকতে হবে। কোভিড থেকে সেরে ওঠা সকল রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডি একরকম থাকে না। রক্তের প্লাজমায় যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তার একটা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত হলে সেটা আমরা নেই। একজনকে ২০০ মিলিমিটার পরিমাণ প্লাজমা দেওয়া গেলে সেটি ভালো ফল হতে পারে। প্লাজমা থেরাপির কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কিছু নেই। তবে দেখতে হবে সেরে ওঠা ব্যক্তির মধ্যে কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর ২৮ দিন পার হয়েছে কিনা।’

কোভিড-১৯ ধরা পরার পর যত দ্রুত সম্ভব প্লাজমা থেরাপি দেওয়ার কথা বলছেন তিনি।তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলছেন, ‘শেষের দিকে আসলে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা তীব্র হয়ে যায়। ফুসফুসের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। শরীরে নানা ধরনের প্রদাহ দেখা দেয়। তখন এর কার্যকারিতা কম হয়। আ’ক্রান্ত হওয়ার প্রথম দিকে যদি দেওয়া যায় তাহলে ফলটা ভালো পাওয়া যায়।’

সূত্র- আমাদের সময়

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button