Jana Ojana

কারাগারের কেমন সময় কাটাচ্ছে পাপিয়া ??

বেশ বিলাসী জীবন ছিল তার। সময় কাটতো আমদেই। থাকতেন পাঁচতারা হোটেলের বিলাসবহুল ঘরে। সুন্দরী তরুণীরা ঘিরে থাকতো তাকে।আর তিনি থাকতেন সমাজের ‘এলিট’ শ্রেণির কিছু মানুষের অপেক্ষায়। তারা আসতেন, তাদের আমোদিত করাই ছিল তার কাজ। বলছিলাম আলোচিত চরিত্র যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার কথা।

রাতারাতিই যেন বদলে গেছে অন্ধকার জগতের ‘লেডি ডন’ পাপিয়ার জীবন। পাঁচতারা হোটের বিলাসবহুল ঘর এখন তার কাছে দিবাস্বপ্নই বটে। আর বিলাসী জীবন, দুঃসপ্ব। যার সূর্য ওঠে কারাগারের অন্ধকার কুঠুরিতে, আবার সন্ধ্যা ঝুলে পড়ে গারদের লোহার দেয়ালে, তার কাছে সব দুঃস্বপ্নই বটে।

কারাগারের বন্দি জীবনে অতীত পাপের খেসারত দিচ্ছেন পাপিয়া। সময় চলছে কচ্ছপের পিঠে চড়ে। আচরণে কোনো অনুতাপ নেই। নেই অহমিকা। চলাফেরায় ভাবলেশহীন। নির্লিপ্ত দিনযাপন। এমনই তথ্য মিলেছে কারাসূত্রের সঙ্গে আলাপে।করোনাভা’ইরাস পরিস্থিতির কারণে র‌্যাবের রিমান্ডের মাঝপথে তাকে কাশিমপুর কারাগারের হাজতে পাঠানো হয়। তিনটি মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হলেও পাপিয়ার আরও ১০ দিনের রিমান্ডের অপেক্ষা।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, নিঃসঙ্গ জীবনে পাপিয়ার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। সংবেদনশীল আসামি হওয়ায় বন্দি সেলে পাপিয়ার কারও সঙ্গে সেভাবে মেলামেশার সুযোগ নেই। তাকে আলাদাই রাখা হয়েছে। কারাগারে আসার পর থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে আসেনি।

এদিকে পাপিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে এনে আরও একটি মামলা হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি এই মামলাটি করেছে। তবে, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সেটার তদন্ত কাজ স্থগিত হয়ে আছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা। এই নিয়ে তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হলো।

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের (বর্তমানে আজীবন বহিষ্কৃত) সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্বামী মফিজুর রহমান সুমন, দুই সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও কাজী তায়্যিবা নূরসহ দেশত্যাগের সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন। ধরা পড়ার পর তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিনটি মামলা করে র‌্যাব।

যুবলীগের এই নেত্রী (পরে বহিষ্কৃত) গ্রেপ্তারের আগে গুলশানের অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট ভাড়া নিয়ে মাসে বিল গুনতেন কোটি টাকা। সব সময় সঙ্গে থাকত সাতজন অল্পবয়সী তরুণী। আর আনাগোনা ছিল সমাজের নানা পর্যায়ের ‘এলিট’ মানুষের।

কারাগার সূত্রটি জানিয়েছে, সংবেদনশীল আসামি হওয়ায় পাপিয়াকে রাখা হয়েছে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ একটি সেলে। তার সঙ্গে আর কোনো বন্দি নেই। দিন-রাত একাকি কাটে ছোট্ট ঘরের চার দেয়ালে। মাঝে মধ্যে বই পড়েন। বাকি সময় শুয়ে-বসে আর ঘুমিয়েই কাটান একসময়ের পাঁচতারকা হোটেলের বিলাসী গ্রাহক পাপিয়া। তাছাড়া করোনাভা’ইরাসের বিশেষ পরিস্থিতির জন্য আপাতত এই কারাগারের বন্দিদের সঙ্গে আত্মীয়-স্বজনদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে।

এত অপকর্মে লিপ্ত থাকলেও পাপিয়ার মধ্যে তেমন কোনো অনুশোচনার লক্ষণ নেই বলে জানায় কারাসূত্র। তারা বলছে, তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা বোধ নেই। তবে মাঝেমধ্যে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেন। বিলাসবহুল চলাচলে অভ্যস্থ পাপিয়া এই বন্দি পরিবেশ মানিয়ে নিতে প্রথমে কষ্টই করেছেন।

এদিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আনোয়ার রিপন জানান, পাপিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি ভালো আছে এবং তিনি সুস্থ আছেন। কোনো সমস্যা নেই। আমরা নিয়মিত তার খোঁজ রাখি।

র‌্যাব জানিয়েছে, তিনটি মামলায় পাপিয়ার ১৫ দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। গত ১৬ মার্চ পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনে র‌্যাব। কিন্তু করোনাভা’ইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় তাকে পাঁচ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ২০ মার্চ কারাগারে পাঠানো হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পাপিয়ার কাছ থেকে যা উদ্ধার হয়: র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে পাসপোর্ট, নগদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা, জাল টাকা, ১১ হাজার ৪৮১ ইউএস ডলার, ৩০১ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান রুপি উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করে র‌্যাব।

পরে পাপিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে একটি অবৈধ অস্ত্র, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় শেরেবাংলানগর থানায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে র‌্যাব।

বহিস্কৃত এই যুবলীগ নেত্রীকে গ্রেপ্তারের পর তথ্য বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। গুলশানের পাঁচ তারকা হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট সাড়ে ৪ মাস ধরে ভাড়া ছিল পাপিয়ার কাছে। এ সময়ে হোটেলটির কক্ষ ভাড়া, মদের বিল, খাবারের খরচসহ আনুষঙ্গিক মোট বিল হয়েছিল তিন কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রতিদিন হোটেলের বিল বাবদ গড়ে খরচ করেন আড়াই লাখ টাকা। তরুণীদের অনৈতিক ব্যবহার, অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান, জাল নোটের কারবার, চাঁদাবাজি, তদবির-বাণিজ্য, জায়গাজমি দখল-বেদখল ও অনৈতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হন পাপিয়া ও সুমন দম্পতি। উৎস : ঢাকাটাইমস

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button