আজ সেই গার্মেন্টস মালিককন্যার বিয়ে !!

এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু চট্টগ্রামের এক কারখানার মালিক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এস এম আবু তৈয়ব।। এর কারণ কিন্তু তার বিত্ত-বৈভব নয়, কারণ সাধারণ মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা। মেয়ের গায়েহলুদে নিজ কারখানার দেড় হাজার শ্রমিককে নিমন্ত্রণ করে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। আজ ৫ জানুয়ারি তার মেয়ের বিয়ে।

জানা যায়, নগরীর নেভি কনভেনশন সেন্টারে এই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিয়ে অনুষ্ঠানের আগে শুক্রবার দেড় হাজার গার্মেন্টস কন্যাকে নিয়ে মেয়ে প্রীতির গায়েহলুদের অনুষ্ঠান করা হয়। এতে গার্মেন্টস কন্যাদের সরব অংশগ্রহণ পুরো অনুষ্ঠানটিকে দেয় আলাদা সৌন্দর্য।

এদিকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট গার্মেন্টসের মালিক, খ্যাতনামা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতা এবং নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব নিজের একমাত্র কন্যার গায়েহলুদের ব্যবস্থা করেন গার্মেন্টসের দেড় হাজার নারী শ্রমিকের সঙ্গে নিয়ে।

জানা যায়, পুরো অনুষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা করে গার্মেন্টস কর্মীরাই। কারখানার সব নারী শ্রমিককেই তিনি দেন হলুদ শাড়ি। যে শাড়িটি তিনি নিজের স্ত্রী ও স্বজনদের জন্য কেনেন, ঠিক একই শাড়ি কেনেন কারখানার দেড় হাজার শ্রমিকের জন্য। পুত্রসহ নিজে গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে যে পাঞ্জাবি পরেন, ঠিক একই পাঞ্জাবি দেন গার্মেন্টসের পুরুষ শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের। চট্টগ্রাম ক্লাবে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেই বাবুর্চি রান্না করবেন, তাকে দিয়েই একই মেন্যুর রান্না পরিবেশিত হয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারীদের মাঝে।

এদিকে গার্মেন্টস সূত্রে জানা যায়, গায়েহলুদ উপলক্ষে শুক্রবার কারখানার সব শাখায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। গার্মেন্টসের ছাদের ওপর মঞ্চ করে আয়োজন করা হয় মালিককন্যার গায়েহলুদের অনুষ্ঠান। পুরো ছাদ জুড়ে ছিলেন শত শত নারী। আর তারা সবাই-ই গার্মেন্টস কন্যা। সবার পরনে একই শাড়ি। ব্যবসায়ী আবু তৈয়বের স্ত্রী উলফাতুন্নেছা পুতুলও একই শাড়ি পরে এসেছিলেন অনুষ্ঠানে।

এই দম্পতির একমাত্র কন্যা সাইকা তাফাননুম প্রীতির বিয়ে হচ্ছে ঢাকার বারিধারার আসলাম মোল্লা ও রুবিনা মোল্লার পুত্র শফিউল ইসলাম মোল্লার (নিলয়) সঙ্গে।

এই বিরল আয়োজনে ব্যাপারে এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘এটা প্রচারের জন্য নয়। গার্মেন্টস কারখানার এই খেটে খাওয়া শ্রমিকদের প্রচুর ভূমিকা রয়েছে আমার জন্য, আমার কন্যার জন্য, পুরো পরিবারের জন্য। এরাইতো রক্ত ঘাম দিয়ে আমাকে এই অবস্থানে এনেছেন। আমার সন্তানকে একটি মর্যাদার আসন দিয়েছেন। আমি মনে করি, এরা আমার পরিবারের অংশ। তাই মেয়ের গায়েহলুদের অনুষ্ঠানটি আমি তাদের সঙ্গে করেছি।’

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *