করোনা-ভাইরাসের প্রভাবে খুলনাঞ্চলে কাঁকড়া-কুঁচে ব্যবসায় ধস !!

চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় খুলনাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় উৎপাদিত কুঁচে ও কাঁকড়া রফতানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়াই কুঁচে ও কাঁকড়া উৎপাদনে নিয়োজিত প্রান্তিক চাষিরা পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অসংখ্য কুঁচে ও কাঁকড়ার খামারে মড়ক দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার উপকূলবর্তী এলাকায় চিংড়ি মাছের পাশাপাশি কুঁচে ও কাঁকড়ার চাষ হয়। স্বল্প বিনিয়োগে অধিক মুনাফার আশায় হাজার হাজার মানুষ কুঁচে ও কাঁকড়া চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। খুলনা বিভাগের সব থেকে বেশি পরিমাণে কুঁচে ও কাঁকড়ার খামার রয়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। সেখানের পারুলিয়া, উজিরপুর, শ্যামনগর ও মুন্সীগঞ্জ বাজারের ডিপোগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কাঁকড়া ও কুঁচে কেনাবেচা হয়। এছাড়া খুলনার দাকোপ ও কয়রা উপজেলাতেও ব্যাপকহারে কাঁকড়া চাষ হয়ে থাকে। সুন্দরবন নির্ভর এই কাঁকড়া চাষিরাও পড়েছেন বিপাকে।

চীন কুঁচে ও কাঁকড়ার একমাত্র আমদানিকারক দেশ। তবে গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে চীনে রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারে কুঁচে ও কাঁকড়া কেনাবেচায় ব্যাপকভাবে ধস নেমেছে। আগে যে কাঁকড়া প্রতি কেজি বিক্রি হতো ২ হাজার টাকা এখন তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র তিন-চারশ টাকা।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে জেলায় ৩১০ দশমিক ৯ হেক্টর জমিতে কাঁকড়া চাষ হয়। ওই জমি থেকে দুই হাজার ১৯০ দশমিক ৪ মেট্রিক টন ও সুন্দরবন থেকে এক হাজার ১০৯ মেট্রিক টন কাঁকড়া সংগ্রহ করা হয়।

ব্যবসায়ীরা জানান, তারা চীনের আমদানিকারকদের কাছে ১৫০ কোটি টাকা পাবেন। এর ফলে এক দিকে তাদের ব্যবসা বন্ধ হতে শুরু হয়েছে। অপরদিকে পাওনা টাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন আড়তদাররা। অচিরেই চীন যদি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারে তাহলে কুঁচে ও কাঁকড়া চাষে বিপর্যয় অনিবার্য।

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান জানান, বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলা সাতক্ষীরা। এখানে চিংড়ির পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কুঁচে ও কাঁকড়া চাষ হয়ে থাকে। তবে চীনে করোনাভাইরাসের কারণে কুঁচে ও কাঁকড়া রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *