কষ্টের কাহিনি বলতে বলতে কাঁদলেন অভিভাবক, শুনে কাঁদলেন ইউএনও !!

শতভাগ শিশু ভর্তি ও ঝরেপড়া রোধ নিশ্চিতকল্পে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে শত শত মানুষ উপস্থিত হন। তবে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক মঞ্চের আসন ছেড়ে দর্শকদের সাড়িতে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখে অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেন।শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ৭৩নং ফতুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপনের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাবিনা নার্গিস, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সালমা সুলতানা, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মীর ফয়সাল আলী, সালাউদ্দিন মুক্তি, হাবিবুর রহমান আজাদ, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, মাহাবুবুর রহমান খোকা, ফতুল্লা রিপোটার্স ক্লাবের সভাপতি রনজিৎ মোদক, সাধারণ সম্পাদক কাজি আনিসুর রহমান প্রমুখ।

সমাবেশে ইউএনও নাহিদা বারিক যখন বক্তব্য রাখছিলেন এসময় দর্শক সাড়িতে বসা এক মা কান্না করছিলেন। সেই দৃশ্য দেখে ফেলেন ইউএনও। তিনি বক্তব্য বন্ধ রেখে ওই মায়ের কান্নার কারণ জানতে চান। পরে সেই মা কান্না কণ্ঠে তার সমস্যার কথা জানান। তার দুটি সন্তানের লেখাপড়া করানোর ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সাধ্য না থাকায় তিনি সন্তানদের পড়াতে পারছেন না বলে জানান।

এসময় ওই মা তার জীবনের নানান হতাশার কথা খুলে বলেন এবং ইউএনওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। তার জীবনের কষ্ট শুনে ইউএনও নিজেও কেঁদে ফেলেন। পরে তিনি সেই মাকে একটি সেলাই মেশিন দেয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। তার দুই সন্তান যেন অর্থের অভাবে লেখাপড়া বন্ধ না করেন সেজন্য অনুরোধ করেন এবং সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, প্রতিটি মায়ের উচিত তার সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মেলামেশা করছে এবং ঠিকমতো লেখাপড়া করছে কি-না এসব ব্যাপারে খোঁজ রাখা। সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করতে হলে সর্ব প্রথম মায়ের ভূমিকা সঠিকভাবে পালন করতে হবে। সন্তানের প্রতি মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে। আর লেখাপড়ার ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি মায়েদের সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে। আর সব মায়েরা যেন তাদের সন্তানদের বাল্যবিবাহ না দেন সেদিকে সচেতন হতে হবে।

এসময় উপস্থিত মায়েরা তাদের সন্তানদের বাল্য বিবাহ না দেয়ার হাত তুলে ওয়াদা করেন।এদিকে অনুষ্ঠান শেষে একই স্কুলের নির্মাণাধীন শহিদ মিনার উদ্বোধন করেন ইউএনও নাহিদা বারিক। এসময় ফতুল্লার ৪টি স্কুলের ১৪ জোড়া স্কুল বেঞ্চ বিতরণসহ স্কুলের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার উদ্বোধন করেন তিনি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *