Islamic

জেনে নিন, দোয়া কবুলের সময় ও কিছু পূর্বশর্ত !!

দোয়া ইসলামের অন্যতম ইবাদত। হাদিস শরিফে দোয়াকে ইবাদতের মগজ আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে দোয়ায় মত্ত হয়ে যেতেন।পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমার কাছে আমার বান্দা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে (তখন বলে দাও যে) নিশ্চয়ই আমি তাদের কাছে। প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই।

সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় ও ঈমান আনয়ন করে, আশা করা যায় তারা সফলকাম হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৬)দোয়া করার জন্য আল্লাহর ওলি হওয়া জরুরি নয়। যেকোনো পাপী বান্দার দোয়াও মহান আল্লাহ কবুল করেন।

অ’ভিশপ্ত শয়তান আদম (আ.)-এর সামনে সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এর শাস্তিস্বরূপ কিয়ামত অবধি তাকে অভিশপ্ত করা হয়েছে। এমন মুহূর্তেও সে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছে। সে আল্লাহর কাছে কিয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকার দোয়া করেছে। মহান আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ সৃষ্টিজগৎ সৃষ্টি করার পর আরশে লিখে দিয়েছেন যে আমার রহমত আমার ক্রোধের ওপর অগ্রগামী হয়ে গেছে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৭৫১)

নিচে দোয়া কবুলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময় দেয়া হলো :

১. আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কাউকে না ডাকা:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন:

“যখন প্রার্থনা করবে তখন শুধু আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করবে এবং যখন সাহায্য চাইবে তখন শুধু আল্লাহ্‌র কাছে সাহায্য চাইবে।
”[সুনানে তিরমিযি (২৫১৬)]

এটাই হচ্ছে আল্লাহ্‌র বাণীর মর্মার্থ

“আর নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহ্‌রই জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহ্‌র সাথে অন্য কাউকে ডেকো না।”
[সূরা জিন্‌, আয়াত: ১৮]দোয়ার শর্তগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এ শর্ত পূরণ না হলে কোন দোয়া কবুল হবে না, কোন আমল গৃহীত হবে না।

অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজেদের মাঝে ও আল্লাহ্‌র মাঝে মৃতব্যক্তিদেরকে মাধ্যম বানিয়ে তাদেরকে ডাকে।
তাদের ধারণা যেহেতু তারা পাপী ও গুনাহগার, আল্লাহ্‌র কাছে তাদের কোন মর্যাদা নেই; তাই এসব নেককার লোকেরা তাদেরকে আল্লাহ্‌র নৈকট্য হাছিল করিয়ে দিবে এবং তাদের মাঝে ও আল্লাহ্‌র মাঝে মধ্যস্থতা করবে।

এ বিশ্বাসের কারণে তারা এদের মধ্যস্থতা ধরে এবং আল্লাহ্‌র পরিবর্তে এ মৃতব্যক্তিদেরকে ডাকে। অথচ আল্লাহ্‌ বলেছেন:

“আর আমার বান্দারা যখন আপনাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে (তখন আপনি বলে দিন) নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী।
দোয়াকারী যখন আমাকে ডাকে তখন আমি ডাকে সাড়া দিই।”
[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬]

২. শরিয়ত অনুমোদিত কোন একটি মাধ্যম দিয়ে আল্লাহ্‌ তাআলার কাছে ওসিলা দেয়া।

৩. দোয়ার ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করা:

তাড়াহুড়া করা দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে বড় বাধা। হাদিসে এসেছে,

“তোমাদের কারো দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তাড়াহুড়া করে বলে যে: ‘আমি দোয়া করেছি; কিন্তু, আমার দোয়া কবুল হয়নি”[সহিহ বুখারী (৬৩৪০) ও সহিহ মুসলিম (২৭৩৫)]

বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞেস করা হল:

ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাড়াহুড়া বলতে কী বুঝাচ্ছেন? তিনি বললেন: বলে যে,
আমি দোয়া করেছি, আমি দোয়া করেছি;
কিন্তু আমার দোয়া কবুল হতে দেখিনি।
তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং
দোয়া ছেড়ে দেয়।”

৪. দোয়ার মধ্যে পাপের কিছু না থাকা:

সহিহ মুসলিমে (২৭৩৬) আরও এসেছে-

“বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোন পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে।

৫. আল্লাহ্‌র প্রতি ভাল ধারণা ও একীন নিয়ে দোয়া করা।
নবী (সা:) বলেছেন:

“আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘আমার বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারণা করে আমি তেমন।”
[সহিহ বুখারী (৭৪০৫) ও সহিহ মুসলিম (৪৬৭৫)]

আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে,

“তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস (একীন) নিয়ে আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া কর।”[সুনানে তিরমিযি]

তাই যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করে আল্লাহ্‌ তার উপর প্রভুত কল্যাণ ঢেলে দেন, তাকে উত্তম অনুগ্রহে ভূষিত করেন, উত্তম অনুকম্পা ও দান তার উপর ছড়িয়ে দেন।

৬. দোয়াতে মনোযোগ থাকা:

দোয়াকালে দোয়াকারীর মনোযোগ থাকবে এবং যাঁর কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তাঁর মহত্ত্ব ও বড়ত্ব অন্তরে জাগ্রত রাখবে।

নবী (সা:) বলেন,
“তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহ্‌ কোন উদাসীন অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।
”[সুনানে তিরমিযি (৩৪৭৯)]

৭. খাদ্য পবিত্র (হালাল) হওয়া:

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন,
“আল্লাহ্‌ তো কেবল মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করেন”
[সূরা মায়েদা, আয়াত: ২৭]

এ কারণে যে ব্যক্তির পানাহার ও পরিধেয় হারাম সে ব্যক্তির দোয়া কবুল হওয়াকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুদূরপরাহত বিবেচনা করেছেন।হাদিসে নবী (সা:) এমন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন, যিনি দীর্ঘ সফর করেছেন, মাথার চুল উস্কুখুস্ক হয়ে আছে; তিনি আসমানের দিকে হাত তুলে বলেন:

ইয়া রব্ব, ইয়া রব্ব! কিন্তু, তার খাবার-খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পরিধেয় হারাম, সে হারাম খেয়ে পরিপুষ্ট হয়েছে তাহলে এমন ব্যক্তির দোয়া কিভাবে কবুল হবে?[সহিহ মুসলিম, (১০১৫)]

ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন,
হারাম ভক্ষণ করা দোয়ার শক্তিকে নষ্ট করে দেয় ও দুর্বল করে দেয়।

৮. দোয়ার ক্ষেত্রে কোন সীমালঙ্ঘন না করা:

কেননা আল্লাহ্‌ তাআলা দোয়ার মধ্যে সীমালঙ্ঘন করাটা অপছন্দ করেন।
আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন,“তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক; নিশ্চয় তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।”
[সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৫]

৯. ফরয আমল বাদ দিয়ে দোয়াতে মশগুল না হওয়া:

(সুনানে তিরমিজি)।

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button