ঢাকা প্রস্তুত !! রাত পোহালে ভোট – সব যান চলাচল বন্ধ হচ্ছে !!

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাত পোহালে ভোট। এ নির্বাচনের উপলক্ষে সব ধরণের প্রস্ততি সম্পূর্ণ করেছে নির্বাচন কমিশন ( ইসি)। সব কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ( ইভিএম) ব্যবহার হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা মিলে মোট দায়িত্বে থাকছেন লক্ষাধিক সদস্য। ভোট নিয়ে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ বিএনপির পাল্টা পাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন। ইসি বলছে সব কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কশিমনার কেএম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ভাল রয়েছে। সব কিছু কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কোথাও থেকে কোন আভিযোগ আমরা পাইনি। আওয়ামী লীগের জনসভা নিয়ে সিইসি বলেন বলেন, ‘আজকে সভার বিষয়ে তারা (আ’লীগ) আগে আমাদের কিছু জানায়নি। পরে ওনারাই (বিএনপি) জানালেন জনসভা হচ্ছে। পরে চেক করে দেখলাম সভা হচ্ছে। সেটা নির্বাচন সংক্রান্ত জনসভা নয়, মুজিব বর্ষের প্রস্ততি নিয়ে সভা হচ্ছে। আমাদের কাছে তারা বলেনি, সেখানে নির্বাচন নিয়ে যদি কিছু না বলে তাতে নির্বাচনের কোড অব কনডাক্ট ভায়োলেট হবে কিনা তা আলাদাভাবে বলা নেই। তবে আমি মনে করি নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সভাটা তাদের না করাই উচিত ছিল। আর করার দরকার হলে আমাদের অনুমতি বাা পরামর্শ নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারা সেটি নেননি, আমরা জানিই না।

নূরুল হুদা বলেন, যেকোন সময়ের চেয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে। প্রার্থীরা তাদের প্রচার চালাচ্ছেন। কোন বাধা দেখি না। আমাদের কাছে ধরপাকরের তথ্য নেই। কোন ক্রিমিনাল, সন্ত্রাস, বোমাবাজ যদি এখানে আসে তাদেরকে তো পুলিশ নজরদারিতে রাখবে এবং ধরবেই। কোন বাসা বাড়িতে তল্লাসী করা রেইড করা হচ্ছে না। অন্যান্য জায়গায় যদি বাইরে থেকে এসে থাকে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে বলেছি নিষ্প্রয়োজনে কেউ যেন ঢাকায় না আসে। আবার বলেছি ভোটকেন্দ্রের চারপাশে যেন নিষ্প্রয়োজনীয় কোন জটলা না থাকে। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। ভোট দিয়ে যেন ভোট কেন্দ্রে কেউ না থাকে এটা আমরা চাচ্ছি।

সূত্র জানায়, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ৬৫ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মাঠে নেমেছে। এছাড়া ১০ প্লাটুন বিজিবি রিজর্ভ থাকবে। সব বাহিনী মিলে মোট ৫০ হাজারের মতো ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। বিধি অনুযায়ী, ভোটের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচারণা শেষ হযেছে। কাল(১ ফেব্রুয়ারি) দুই সিটিতে ভোট রয়েছে। এ দিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একযোগে সব কেন্দ্রে ভোট চলবে ইভিএমে।

ভোটের দুই দিন আগে ৩০ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার দিনের জন্য দায়িত্ব পালন করছে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। ইসি কর্মকর্তারা জানান , দুই সিটিতে মোট প্রিজাইডিং আফিসার থাকবে ২৪৬৮ জন, সহকারী প্রিজাইডিং থাকবে ১৪ হাজার ৪শ ৩৪জন, পোলিং আফিসার থাকবে ২৮হাজার ৮৬৮ জন, এছাড়া কারিগরি সহায়তায় (সেনাবাহিনী) থাকবে ৪ হাজার ৯৩৬ জন। সব মিলে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা থাকবে ৫০ হাজার ৭০৬ জন।

দুই সিটিতে আইনশৃঙ্খলায় থাকবে পুলিশ মোবাইল টিম ১২৯০ জন, পুলিশ স্টাইকং ৪৩০, পুলিশ রিজার্ভ ৫২০, র‌্যা ১৪৩০ জন,বিজিবি ২২৫০, ভোটকেন্দ্র ফোর্স থাকবে ৪১ হাজার ৯৫৬ জন, মোট ৪৭ হাজার ৮৭৬ জন। এছাড়া নৌপুলিশ থাকবে বলে ইসি সূত্র জানিয়েছে। এ নির্বাচনে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি নিয়োগ করা হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন করে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত খাছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মোট সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি। এই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। এখানে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১ হাজার ৩১৮ টি, ও ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭ হাজার ৮৪৬ টি। দক্ষিণ সিটিতে মোট সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৫। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১ হাজার ১৫০ টি, ভোটকক্ষ ৫৫৮৮ টি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *