ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ

সাইবার অপরাধীদের ত্রাস অফিসার ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ !

প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইমের ঘটনা গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছে। দুর্ভাগ্যক্রমে, আগামী বছরগুলিতেও সাইবার অপরাধের আরোও বিস্তারের সম্ভবনা রয়েছে। সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে দক্ষতার সাথে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ অতীতের তুলনায় এখন অনেক বেশি সক্রিয় এবং প্রস্তুত। বাংলাদেশ পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন, সিটিটিসি, ডিএমপি সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে দেশের অগ্রণী প্রতিষ্ঠান। ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ এই বিভাগে কর্মরত একজন তরুণ প্রতিভাবান অফিসার, যিনি অনেক হাই প্রোফাইল এবং জটিল মামলা সমাধান করেছেন এবং একের পর এক সাইবার অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে চলেছেন। প্রশংসনীয় এবং মেধাবী কাজের জন্য তিনি ২০২০ সালে বাংলাদেশ পুলিশ এর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি “বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম-সেবা)” অর্জন করেন। এছাড়াও ডিএমপির মাসিক অপরাধ সম্মেলনে তাঁর দুর্দান্ত কাজের জন্য প্রায় প্রতি মাসেই তিনি বিশেষ পুরষ্কার পান।

সহকর্মীদের মধ্যে ধ্রুব একজন নির্ভরযোগ্য এবং নিবেদিত অফিসার হিসাবে পরিচিত। ডিপার্টমেন্টে সবাই তাঁর আন্তরিকতা ও সততার প্রশংসা করলেও সাইবার অপরাধীদের মধ্যে ধ্রুব হলেন ত্রাসের নাম। তার কাজের একটু নমুনা দেখলেই এর কারণ পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাঁর সমাধান করা কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কেস হলো- দু’ শতাধিক ফেসবুক আইডি হ্যাকার সনাক্তকরণ এবং গ্রেপ্তার, জনপ্রিয় ওয়েবসাইট বিশ্বয় ডটকমের হ্যাকার সনাক্ত এবং গ্রেপ্তার, আরং মহিলা সহকর্মীদের গোপন ভিডিও প্রকাশকারী সনাক্ত এবং গ্রেপ্তার, জাতির জনকের বদনামকারী সনাক্ত ও গ্রেপ্তার, ব্যাংক জালিয়াতিদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তার, জাল নোটের জন্য বিদেশী অপরাধীদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তার, এটিএম কার্ড জালিয়াতিদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তার, নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন নিও জেএমবি মিডিয়া বিভাগের প্রধানকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তার, ইত্যাদি।

ধ্রুব ১৯৮৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস টাঙ্গাইলের মির্জাপুর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এপ্লাইড ফিজিক্স, ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএস এবং এমএস করেছেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। এর আগে তিনি সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করেন। পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি ৩৪ তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ২০১৬ সালের ১ জুন, বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে যোগদান করেন। সারদায় প্রশিক্ষণের পর ধ্রুব ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে যোগ দান করেন। বর্তমানে তিনি এই বিভাগেই সহকারী কমিশনার হিসাবে কর্মরত আছেন।

পুলিশের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাংলাদেশে সাইবার সম্পর্কিত অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ধ্রুব অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। দেশের তরুণ নাগরিকদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে তিনি নিয়মিত আলোচনা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সাইবার অপরাধীদের থেকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ চাইলে ধ্রুব বলেন-

১. নিজস্ব ইন্টারনেট সুরক্ষা সম্পর্কে সতর্ক থাকুন, যেমন একটু জটিল পাসওয়ার্ড, টু-ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন এবং ট্রাস্টেড কন্টাক্টস ব্যবহার করুন।

২. পাসওয়ার্ড, পিন বা অন্য কোনও সংবেদনশীল আর্থিক বা ব্যক্তিগত তথ্য কারও সাথে শেয়ার করবেন না।

৩. শুধুমাত্র নিরাপদ ওয়েবসাইটগুলি ব্রাউজ করুন।

৪. কারও সাথে ব্যক্তিগত এবং অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করার বিষয়ে খুব সতর্ক থাকুন।

৫. কিছু শেয়ার দেবার আগে ইন্টারনেটে প্রকাশিত তথ্যের সত্যতা যাচাই করুন।

৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৌজন্যতা বজায় রাখুন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *