নুরার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন শেষ করে দিল ওরা !!

কাজল ও ফাতেমা দম্পতির মেয়ে নুরা। বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে সে সবার বড়। ছিল মেধাবীও। তাই, বাবা-মায়ের বিশেষ নজরই ছিল তার ওপর। প্রয়োজন ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলত না সে।বিদ্যালয় সময়ের বাইরে সারাক্ষণ লেখাপড়ায় মনোযো ছিল তার। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি পদে পদে সে সফলতার সাক্ষর রেখেছিল। গত বৃহস্পতিবার বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামে একই পরিবারের চারজন নিহতদের মধ্যে একজন এই মেধাবী নুরা।

স্থানীয় এইচ এ কে একাডেমির শিক্ষার্থী হিসেবে চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল নুরা। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের আগেই দুর্বৃত্তের হাতে মা, ছোট বোন ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে হ’ত্যার শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে হলো তাকে।এইচএকে একাডেমির পরিচালক শাহীন সুলতানা জানান, নুরা প্রতিটি পরীক্ষায় সফলতার সাক্ষর রেখেছিল। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিও পেয়েছিল। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সে অংশ নিয়েছিল। এখানেও ফলাফলে তার ভালো করার কথা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, নুরা স্কুলের শিক্ষকদের বলেছিল লেখাপড়া শেষ করে চিকিৎসক হয়ে দেশের অবহেলিত, খেটে খাওয়া মানুষের সেবা করবে। বিদ্যালয়ে এসে তার মা প্রায়ই মেয়ের লেখাপড়ার খবর নিতেন। অসম্ভব একজন ভদ্র মেয়ে ছিল নুরা। তার মার্জিত আচরণে সবার বিশেষ নজরেই থাকত। অকালেই নুরার মতো একটি মুকুল এভাবে ঝরে যাবে এ ঘটনা যেন কারও বিশ্বাসই হচ্ছে না। যারা এই মেধাবী নুরার স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি তার।

নুরার দাদা আবুল হোসেন জানান, তার ছেলে কাজলের স্বপ্ন ছিল তার সন্তানদের মানুষ করেই তবে প্রবাস থেকে ফিরবেন। ছেলে প্রবাসে থাকায় তিনি মাঝে মাঝে পুত্রবধূ ও নাতনিদের খোঁজখবর নিতে আসতেন। তার পুত্রবধূ অসম্ভব ধার্মিক নারী ছিলেন। তার নাতনিরাও মেধাবী ছিল। বিশেষ কোনো প্রয়োজন না হলে তারা কেউ বাসা থেকে বের হত না। এ হ’ত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে একদিকে সন্তানদের স্বপ্নের সঙ্গে সঙ্গে তার ছেলের স্বপ্নও নিভে গেল।

সূত্রঃ যুগান্তর

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *