ভালবাসার টানে যেভাবে সখীপুরে নেপালি তরুণী !!

প্রেমের টানে নিজ ধর্ম ছেড়ে নেপাল থেকে টাঙ্গাইলের সখীপুরে এসেছে সানজু কুমারী খাত্রী (২৫) নামের এক তরুণী। উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের হুমায়ুন কবিরের প্রবাসী ছেলে নাজমুল ইসলামের সঙ্গে ওই মেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তাঁর নাম রাখা হয়েছে খাদিজা আক্তার। এদিকে বিদেশী তরুণীর এমন বিয়ের খবরে প্রতিনিয়তই মানুষজন ভিড় করছে এ বাড়িতে।

জানা যায়, সানজু কুমারী খাত্রী (২৫) তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয়, বাবা জীবিত নেই, তিন বোন ও মাকে নিয়েই তাঁদের সংসার। সানজু কুমারী খাত্রী তিন বছর আগে মালয়েশিয়ায় যান এবং মালয়েশিয়াতে একই কোম্পানিতে কাজ করার কারণে নাজমুলের সঙ্গে পরিচয় ও পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাঁরা বাংলাদেশে আসার পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল আদালতে গিয়ে বিয়ে করেন।

নাজমুলের বাবা হুমায়ুন কবির জানান, আমার ছেলের বউ খাদিজা বাঙালি নারীর মতো বাড়িতে স্বাভাবিক কাজ-কর্ম করছেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় সানজু কুমারী খাত্রী থেকে তাঁর নাম রাখা হয়েছে খাদিজা। সে বাঙালি পোশাক পরলেও ভাষাগত কিছু সমস্যা আছে। তবে বাংলা ভাষা স্পষ্ট করে বলতে না পারলেও আমরা যা বলি তা বুঝতে পারে। আমরা বিদেশী পুত্র বধূকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি। তাঁদের সুখই আমাদের সুখ।

নাজমুল ইসলাম (২৬) বলেন, নেপালের কাঠমুন্ডু শহরেই খাদিজার বাড়ি। মালয়েশিয়ায় একই কোম্পানির সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সুবাদে মেয়েটির সাথে পরিচিত হই এবং সেখান থেকেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে (খাদিজা) ২০১৪ সালে এইচ এস সি পাস করেছে, একই সালে আমিও সখীপুর মুজিব কলেজে এইচ এস সি’র পরীক্ষার্থী ছিলাম। নেপালে খাদিজার বাড়িতে দুইবার গিয়েছি এবং তাদের পরিবারের সম্মতিতেই দ্বিতীয় বার নেপাল গিয়ে ২২ জানুয়ারি কাঠমুন্ডু ডিস্ট্রিক কোর্টে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই এবং দেশে ফিরে ২ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল কোর্টে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে খাদিজা হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ও আমরা কোর্ট ম্যারেজ সম্পন্ন করি। বাড়ি ফিরে স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে গত ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তিন লাখ টাকা দেন মোহর সাব্যস্ত করে আমার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতিতে কাবিন ও বিবাহ সম্পন্ন করি । আমার পরিবার আমাদেরকে সাদরে গ্রহণ করেছে। আমি সবার কাছে দোয়া চাই, আমরা যেনো সুখে থাকতে পারি।

খাদিজা আক্তার বলেন, আমি স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়িসহ সকলকে নিয়ে এখানে ভালো আছি। বাংলাদেশ ও এই গ্রামের পরিবেশ অনেক ভালো লেগেছে। আমি এখানেই স্বামী সংসার নিয়ে থাকতে চাই।কাকড়াজান ইউপি চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম জানান, নেপাল থেকে একটি মেয়ে আমার ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে এসেছে। মুসলমান হয়ে বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন বলে শুনেছি।

সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এএইচএম লুৎফুল কবির বলেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নেপালি মেয়ের বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের সখীপুরে আসার খবরটি শুনেছি। আরও খোঁজ খবর নেব।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *