যে কারনে পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করতে জরুরি নির্দেশনা !!

করোনা ভাইরাসের কারণে পদ্মা সেতু ও রেলসংযোগ প্রকল্পের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অনেক চীনা কর্মকর্তা-কর্মচারি ছুটিতে যাওয়ায় স্থানীয় দক্ষ শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বুধবার (৪ মার্চ) কেরানীগঞ্জের জাজিরা এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যগুলো তুলে ধরে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিতে, কর্মকর্তাদের শারীরিক অবস্থার প্রতিদিনের রিপোর্টিং সিস্টেম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে, পর্যাপ্ত পরিমাণ থার্মোমিটার ও মেডিকেল মাস্ক কেনা হয়েছে এবং এগুলো এই প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত চীনা ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে। ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে এই প্রকল্পের অফিসগুলো প্রতিদিন দুইবার পরিস্কার করা হয়। যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো নেয়ার ফলে এখন পর্যন্ত কেউই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বুড়িগঙ্গা নদীর কাছে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া সিআরইসি’র কার্যকরী নানা পদক্ষেপের কারণে এ দুই মেগা প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো কর্মকর্তার মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি বলেও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআরইসি’র পিবিআরএলপি’র প্রকল্প পরিচালক ওয়াং কুন, জানান, কাজের সুবিধার্থে, এই রেল প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি এখন ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে আনা হচ্ছে এবং প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান ও যন্ত্রপাতির সরবরাহ নিশ্চিত করতে লজিস্টিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর সিআরইসি’র পক্ষ থেকে দুইটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কার্যকরী ও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেনো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত না হয় তা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, এই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি চালিয়ে নেয়া।

ওয়াং কুন জানান, হুবেই ছাড়া চীনের অন্যান্য প্রদেশের কর্মকর্তারা যারা এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছেন তারা এরই মধ্যে বাংলাদেশে ফিরেছেন। এছাড়াও, হুবেই ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের চীনা কর্মকর্তাদের ছুটি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত এ প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা বাংলাদেশে কর্মরত আছেন তাদেরকে বার্ষিক ছুটি না নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের হুবেই প্রদেশ। সিআরইসি’র যেসব চীনা কর্মকর্তা ছুটি কাটাতে হুবেই প্রদেশে গিয়েছেন তাদের ছুটি এখনও বহাল রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার ক্ষেত্রে হুবেই প্রাদেশিক সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্ত্বেও যারা বাংলাদেশে আসার অনুমতি পাচ্ছেন তারা আসার পর কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে কোয়ারেন্টাইন অবস্থায় রাখা হচ্ছে।

ওয়াং কুন এবং বড় প্রকল্পগুলোর চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, বড় প্রকল্পগুলোর কাজের ধারাবাহিকতায় করোনা ভাইরাসের প্রভাব কমাতে বাংলাদেশ সরকারের সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। যেমন, বড় প্রকল্পগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত চীনা কর্মকর্তাদের ভিসার জন্য একটি গ্রিন চ্যানেল তৈরি এবং প্রকল্পের সরঞ্জামাদি আনার ক্ষেত্রে কাস্টমস প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা। ওয়াং কুন বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে পিবিআরএলপি বাস্তবায়নে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তার চেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ধীরগতিতে জমি অধিগ্রহণ ও এ সংক্রান্ত মীমাংসা না হওয়ার কারণে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *