সাতক্ষীরায় আম্ফান’র প্রভাব শুরু, আশ্রয়ের দিকে মানুষের ঢল !!
সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাব শুরু হয়ে গেছে। বেলা আড়াইটা থেকে শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া। ধীরে ধীরে বাড়ছে এর গতিবেগ।আম্ফানে জেলার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ চলছে। এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ায় সহায়তা করছেন স্বেচ্ছাসেবক, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা।
এদিকে যথাসময়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য উপকূলজুড়ে চলছে মাইকিং। মাইকে বলা হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (১৯ মে) মধ্যরাতের পর ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানতে পারে। ঝড়ে জানমাল রক্ষায় সবাইকে নিরপদ আশ্রয়ে সজাগ থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের নির্দেশে জেলার সাতটি উপজেলায় প্রস্তুতিসভা করে সভাও করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল টিম। জেলা উপজেলায় গঠিত মেডিক্যাল টিমের সদস্যদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর আলিফ রেজা বলেন, সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছে। নির্বাচিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার জন্য (প্রতি কেন্দ্রে) ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক ফ্লোরে তিন সেট করে চাবি প্রস্তুত করে যথাস্থানে রাখাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবুজার গিফারি জানান, শ্যামনগর উপকূলে ১৪৪টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। নিরাপদ এসব সেন্টারে এক লাখ ২০ হাজার মানুষকে নিয়ে আসার কাজ চলছে। সাইক্লোন সেল্টারে উপকূলের মানুষদের নিয়ে আসার জন্য ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। করোনাকালে আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। খোলা হয়েছে দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জানা গেছে, নির্বাহী ম্যজিট্রেটের নেতৃত্বে শ্যামনগরের দ্বীপ এলাকা পদ্মপুকুর ও গাবুরা ইউনিয়নের নারী শিশু ও বৃদ্ধদের নৌকাযোগে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ চলছে। উপকূলের বেড়িবাঁধের ৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সেখানে দায়িত্ব পালনে যাচ্ছেন।
জেলায় ১৪৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র আছে। আগে থেকেই সবগুলো আশ্রয়কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপদ্রুত এলাকায় এক হাজার ৭৯৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলোকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
ইতিমধ্যে উদ্ধারকারী দল নির্দেশনা অনুযায়ী উপকূল এলাকায় কাজ শুরু করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরো সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।