করোনার বন্ধের কারণে এক স্কুলের ৫০ ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে!
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় করোনার কারণে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, এই সময় স্কুলের ৫০ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে।
জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার প্রায় প্রতিটি স্কুলের চিত্র প্রায় একই। ইতিমধ্যেই বাল্যবিবাহ প্রবণ জেলা সাতক্ষীরায়, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে বাল্যবিবাহের হার প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু করোনার কারণে সবকিছু বদলে গেছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মরত ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স সাতক্ষীরার কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন রোধে আমরা গত পাঁচ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি। করোনার আগে, জেলায় বাল্যবিবাহের হার অর্ধেকে নেমে এসেছিল। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় গত দেড় বছরে সেই হার বেড়েছে। তবে সঠিক জরিপ ছাড়া এই মুহূর্তে তা কতটা বেড়েছে তা বলা সম্ভব নয়। আমাদের কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। আমি আগামী মাসে এই বিষয়ে একটি জরিপ রিপোর্ট দিতে সক্ষম হব।
ছোটবেলায় বিয়ে করা একটি মেয়ের বাবা বলেন, এলাকার একজন মেধাবী ছেলে আমার মেয়েকে বিরক্ত করত। বিয়ের জন্য হুমকি দিতেন। সময়টা ভালো না। পরবর্তীতে কি হবে এই ভয়ে আমি একটি ভালো পাত্র দেখে মেয়েটিকে বিয়ে করেছিলাম।
আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদের আব্দুর রউফ বলেন, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কিছু বাল্যবিবাহ গোপনে হয়েছে। কিন্তু সেই সংখ্যা এত বেশি নয়। তারপরও আমরা খুঁজছি।
আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কাঞ্চন কুমার দে বলেন, একটি স্কুলের এত ছাত্রছাত্রী কীভাবে বিয়ে করেছে তা জানা যায়নি। ইউনিয়ন পরিষদের কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। যারা গত এক বছরে এখানে বিয়ে করেছেন তাদের সকলের বয়স ১৮ বছরের বেশি। যাইহোক, যদি কেউ গোপনে বাল্যবিবাহ দিয়ে থাকে, তাহলে সে সেই তথ্য ইউনিয়ন পরিষদকে জানায় না।
সদর উপজেলা বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও জেলা মহিলা বিষয়ক বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা জোহরা বলেন, এই খবর শোনার পর আমরা আগামীকাল স্কুলে একটি জরুরি সভা ডেকেছি। সেখানে বিস্তারিত চাওয়া হবে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।