দেশে করোনা পরীক্ষায় আসছে নতুন ‘কৌশল’ !!
করোনার থাবায় বিপর্যস্ত বিশ্ব, হারিয়েছে তার গতি। কেভিড -১৯ ভা’ইরাসের ভয়ে মানুষ হয়েছে ঘরবন্দি। তবুও রক্ষা মেলেনি বিশ্ববাসীর। এই ভা’ইরাসের ছোবলে বিশ্বের ২১৩টি দেশ আ’ক্রান্ত হয়েছে। করোনায় আ’ক্রান্তের সংখ্যা ৭৩ লাখ ২৩ হাজার ৭৬১ জন। মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৭৩১ জন। এ দিকে বাংলাদেশে করোনায় সামাজিক সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নমুনা পরীক্ষার ওপর চাপ বেড়ে গেছে। এটা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। একদিকে নমুনা সংগ্রহের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না, অন্যদিকে প্রতিদিন সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষায় ঘটছে দীর্ঘসূত্রতা। এসব কারণে পরীক্ষা করানো রীতিমতো দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন দুর্যোগ মুহূর্তে পরিস্থিতি উত্তরণে করোনা ভা’ইরাস পরীক্ষায় যুক্ত বিশেষজ্ঞ পর্যায় থেকে নতুন কৌশল নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে নতুন উপসর্গধারীদের। পাশাপাশি আ’ক্রান্তদের পর পর দুটি নেগেটিভ রেজাল্ট দেখে সুস্থ ঘোষণা করার প্রক্রিয়ায়ও আসতে পারে পরিবর্তন।
এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এখন এটি প্রমাণিত যে আ’ক্রান্তদের মধ্যে যারা সুস্থ হয়ে ওঠে, তাদের ভেতর ১৪ থেকে ২১ দিন বা তারও আগেই অনেকের ভা’ইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। ফলে পরীক্ষায় তাদের নেগেটিভ রেজাল্ট আসবেই। তাই যারা বাসায় বা হাসপাতালে আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়ে ওঠে, তাদের পরীক্ষা না করলেও অসুবিধা নেই। বরং এই পরীক্ষায় যে সময় ও জনবল ব্যবহূত হয়, তা নতুন উপসর্গধারীদের পরীক্ষার পেছনে ব্যয় করলে দ্বিগুণসংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এ নিয়ে অবশ্য কারো কারো দ্বিমত রয়েছে।
সরকারের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের উপদেষ্টা কমিটির সদস্যসচিব ও আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘ইউরোপ, আমেরিকা, ভারতসহ যেসব দেশে সংক্রমণ বেশি সেসব দেশে পরীক্ষায় আমাদের চেয়েও অনেক বেশি হিমশিম অবস্থা। কোথাও কোথাও দু-তিন সপ্তাহ সিরিয়াল দিয়ে থাকতে হয় পরীক্ষার আশায়। কোথাও কোথাও জটিল উপসর্গ ছাড়া পরীক্ষাই করা হয় না। আমাদের যেহেতু নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেহেতু আমাদেরও এখন নতুন শনাক্তের দিকে বেশি নজর দিতে হবে।
নমুনা পরীক্ষার নতুন এই কৌশল নিয়ে অভিন্ন মত ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসিক সায়েন্সের সাবেক ডিন অধ্যাপক ও করোনাভা’ইরাস মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের উপদেষ্টা কমিটির আরেক সদস্য ডা. ইকবাল আর্সলান।তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন উপসর্গধারীদের পরীক্ষার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। যাদের একবার পজিটিভ হয়েছে তাদের উপসর্গ যদি কমে যায় বা না থাকে, তবে পরীক্ষা না করলেও চলে। বরং নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরো বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, নতুন অনেকেই পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না। আবার শুধু কৌতূহল বা সন্দেহের বশে অনেকে চার-পাঁচবার করেও পরীক্ষা করাচ্ছে। এতে সময়, কিট ও পরীক্ষা সংক্রান্ত নানামুখী অপচয় হচ্ছে। আর যারা একেবারেই সুযোগ পাচ্ছে না, তাদের হয়রানি বাড়ছে। তাই আমরাও এই পরামর্শের দিকে নজর রাখছি।
দেশে গণস্বাস্থ্যের উদ্যোগে অ্যান্টিবডি টেস্টের পাশাপাশি অ্যান্টিজেন টেস্টের কিট উদ্ভাবনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে গিয়ে গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নিজেরাই পিছু হটে। যদিও গণস্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগ থেকে দাবি করা হয়েছে যে তারা আবারও এই অ্যান্টিজেন টেস্ট নিয়ে কাজ করবে।