Jana Ojana

যেভাবে সামাজিক দূরত্ব সবকিছু বদলে দিচ্ছে !!

মর্যাদা ও স্বীকৃতির আকাঙ্ক্ষা মানুষের সবচেয়ে শক্তিশালী অভিপ্রায়গুলোর একটি। এটি আমাদের উৎসাহিত করে কঠোর পরিশ্রম করতে, ভালো পোশাক পরিধান করতে ও দৃষ্টি আকর্ষক ভোগ-ব্যয়ে লিপ্ত থাকতে।যেমন- আমাদের শখ, পছন্দ ও ছুটি কাটানোর বিষয়গুলোকে ইন্সটাগ্রামে তুলে ধরা। কিন্তু কোভিড-১৯-এর দ্রুত বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে এসব অপশনের বেশিরভাগই আমাদের কাছ থেকে অতিদ্রুত ঝেটিয়ে বিদায় নিয়েছে।

মর্যাদা-প্রত্যাশিত আচরণ আরেকটি পথ, যেখানে লকডাউন হচ্ছে একটি উল্লেখযোগ্য ও ক্ষতচিহ্নধর্মী পরীক্ষা। এর সম্ভাব্য একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলÑ অনেক মানুষ অনেক বেশি কাজ করবে না।এর খুব সহজ কারণ হল, কেউই তাকে খুব কাছ থেকে দেখছে না ও পর্যবেক্ষণ করছে না এবং ভালো কাজ ও অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্য বাহ্বা-ধন্যবাদ পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।আরও খারাপ বিষয় হল- অনেক মানুষের বেলায় অর্থনৈতিক সমস্যার ক্ষতিপূরণের জন্য সামাজিক অধিকার এবং সেটার ক্ষতপ্রলেপ এখন তুলনামূলক দুর্বল।

দাগ কাটার মতো কেউ নেই

একটা সময় ছিল যখন আপনি বেকার হলেও অন্তত রাস্তায় হাঁটতে পারতেন এবং আপনার ওয়ারড্রোবে থাকা স্টাইলিশ কোনো একটি আইটেমের কারণে মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারতেন অথবা সেটি করতে পারতেন আপনার সুন্দর চুলের ছাঁট বা রসালো ও বুদ্ধিতীপ্ত জবাবের কারণে। কিন্তু এখন রাস্তায় মনোযোগ আকর্ষণ বা দাগ কাটার মতো কেউ নেই।

মানুষ মাত্র শেখা শুরু করেছে কতটুকু আমরা আমাদের সৌন্দর্য, আমাদের ক্যারিশমা ও বাগ্মিতার ওপর নির্ভর করি সামাজিক প্রভাবের জন্য। যেমন, সোনিয়া গুপ্তা টুইটারে প্রশ্ন করেছেন, ‘অত্যন্ত মনোযোগ আকর্ষক মানুষ, আপনাদের কাছে আমার খাঁটি একটি প্রশ্ন, উপহাস নয় : আপনারা দৈনন্দিন নিয়মিত সামাজিক মনোযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে যেমনটা অভ্যস্ত, তেমনটি না পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের কেমন লাগছে, কারণ এখন আপনাদের ঘরের ভেতরে অবস্থান করতে হচ্ছে এবং অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হচ্ছে?’

অবশ্যই বলতে হবে, তার প্রশ্নটি কেবল ‘অত্যন্ত মনোযোগ শিকারি মানুষ’-এর চেয়ে আরও অনেক বেশি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। সামাজিক নিশ্চয়তা যেখান থেকে পাওয়া যায় (ধরে নিন নিয়মিত গির্জার মিটিংয়ে অংশগ্রহণ থেকেও) সেটিও এখন অনেক বেশি দুর্বল অবস্থানে চলে গেছে।

মর্যাদার সম্পর্কে ধস

মর্যাদার সম্পর্কে ধস নামার বিষয়টি গভীর হচ্ছে। আমরা চ্যাটে ও জুম করা মিটিংয়ে অনেক সময় হয়তো কাটাচ্ছি; কিন্তু এ মাধ্যমে মর্যাদার প্রকাশ অনেক বেশি কঠিন।যে বস গোটা ‘অফিসরুমে প্রভাব বিস্তার’ করে থাকতেন, আপনার ল্যাপটপের স্ক্রিনে কেবল একটি ছোট বক্স-ফটোর মাধ্যমে তিনি সেই ক্যারিশমা নিশ্চিতভাবেই প্রকাশ করতে পারছেন না।

অন্যরা এটিও বলতে পারছেন না যে, সবাই মনোযোগের সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে শুনছেন অথবা তিনি লম্বা, রসালো বা ভালো ড্রেস পরে আছেন; তাও বলার সুযোগ নেই। এটি আরেকটি পদ্ধতি যেখানে কোভিড-১৯ হচ্ছে ‘মহান সমতা দানকারী’।সংক্ষেপে বলা যায়, আমরা আমাদের মর্যাদার ধারণা লালন করতে পারি কোভিড-১৯ পূর্ববর্তী অতি সাম্প্রতিক অতীত থেকে। বস এখনও বসই আছেন এবং এখনও কেউ ভুলে যায়নি যে টেইলর সুইফট কে।

তবে লকডাউন যেভাবে দীর্ঘায়িত হচ্ছে, আমরা ক্রমবর্ধমান হারে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ব এ মর্যাদা হারানো নতুন বিশ্বের সঙ্গে, যেখানে আগে পরিচিতি না থাকা মানুষের সঙ্গে ফোনকল ও মিটিং লেনদেন হবে।এমনকি এখনও বিখ্যাত থাকা কেউ তার দীপ্তির কিছু অংশ হারিয়ে ফেলতে পারে। লেবর্ন জেমস একজন শীর্ষস্থানীয় এনবিএ তারকা হিসেবে থেকে যাচ্ছেন; কিন্তু তিনি এটি প্রমাণের জন্য প্রতি সপ্তাহে বের হচ্ছেন না। আর এতে করে কোনোভাবে তার খ্যাতি কিছুটা কমেছে, যেমনটি কমেছে খোদ এনবিএ’র খ্যাতি। তবে কিছু বিবেচনায় এ মর্যাদার ধস কিছুটা মুক্তিও দিচ্ছে।

আসলে কোনটি ফ্যাক্টর হচ্ছে

‘আসলে কোনটি ফ্যাক্টর হচ্ছে- সে সম্পর্কে বলার জন্য দীর্ঘস্থায়ী কিছু প্রশ্নের পুনঃপরীক্ষা লাগতে পারে অনেক মানুষের। বর্তমান পরিস্থিতির ইতিবাচক আরও কিছু প্রভাবও আছে- বেশি হারে বাইরে যাওয়া এবং অর্থ ব্যয়ের ঘটনা অনেক কমে আসবে।

উদাহরণস্বরূপ, আপনার কি সত্যিকারার্থে নতুন একটি জ্যাকেট দরকার বা নতুন রেস্টুরেন্টগুলোর উষ্ণ স্বাদ আস্বাদন? এটি সহায়তা করবে আরও কাটছাঁট বাজেট তৈরি করতে অথবা বেকারত্বকে আরও সহনীয় করে তুলতে। সামাজিক বিষয়াবলীতে ক্ষুব্ধ কিছু মানুষ মনে করতে পারে, তারা আরও ভালো আছেন।

সর্বোপরি, এটি সবকিছুর ক্ষেত্রে একটি মারাত্মক অবস্থা। একটি ঝুঁকি হল- যেসব পারফরমার ধারাবাহিকভাবে টিভি কার্যক্রমে থেকে যাবেন, আমরা তাদের মর্যাদাকে উন্নীত করে দেব।হোয়াইট হাউসের কোভিড-১৯ প্রেস ব্রিফিং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রোফাইলকে আংশিক উন্নীত করেছে। কারণ মনে হচ্ছে তিনি তুলনামূলক মর্যাদা শূন্যতায় ছিলেন এবং ব্রিফিংগুলো তাকে আরও বেশি নেতাসুলভ হিসেবে তৈরি করছে।

আপনি যদি সত্যিকারার্থে ক্রমাগত মর্যাদা-সন্ধানের খেলায় আবিষ্ট হয়ে গিয়ে থাকেন, আপনার জন্য সেরা বিকল্প হতে পারে অনলাইন। এ ম’হামা’রীর হাতেগোনা কয়েকটি শক্তিশালী সান্ত্বনার একটি হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৃজনশীলতার নতুন ঢেউ বইয়ে দেয়া।

আরও সাধারণভাবে এবং দীর্ঘমেয়াদের বিবেচনায় বলতে গেলে, প্রযুক্তি খাত নিয়ে প্রত্যাশা করুন এবং মর্যাদা বৃদ্ধির ক্ষীণ প্রত্যাশা জাগিয়ে তুলুন। প্রযুক্তির পণ্য এবং এর সেবাগুলো আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে এবং আমাদের শূন্য হয়ে পড়া মর্যাদা পূর্ণ করছে।

ব্যবহারের বিবেচনায় গেলে ‘ক্ষীণ দৃষ্টি’ হতে পারে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা থেকেও অনেক ছোট। বিখ্যাত বক্তব্যটিকে প্রকাশ করা যায় ভিন্নভাবে- আপনি যে দুই জোড়ার দুটি ভিন্ন মোজা পরে আছেন, জুম করা একটি ফোনকলে এটি কেউ জানতে পারে না।

সুত্রঃ যুগান্তর

J A Suhag

Local News: J A Suhag writes Local News articles for industries that want to see their Google search rankings surge. His articles have appeared in a number of sites. His articles focus on enlightening with informative Services sector needs. he holds the degree of Masters in Business and Marketing. Before he started writing, he experimented with various professions: computer programming, assistant marker, Digital marketing, and others. But his favorite job is writing that he is now doing full-time. Address: 44/8 - North Dhanmondi, Dhaka Email: [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button